নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পাবনার ঈশ্বরদীর সাঁড়াঘাট সংলগ্ন পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে কৃষকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা – মারধর ও গরু লুট করে নিয়ে জবাই করে খাওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঈশ্বরদী শহরের স্টেশন সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জনি, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আক্কাস আলী খান, কৃষক মাসুদুল, আরাফাতসহ অন্যান্যরা বক্তব্য দেন । বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের সময় সন্ত্রাসী কাকন বাহিনী পদ্মা নদীতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে সেখানে ভীতিকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছিল। তারা বছরের পর বছর জোরপূর্বক চরের হাজার হাজার বিঘা জমি দখল এবং পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। গত ২৫ মে সাঁড়াঘাট এলাকায় চরাঞ্চলে বেশ কয়েকজন কৃষক গরু চড়াতে গেলে আওয়ামী সন্ত্রাসী ইঞ্জিনিয়ার কাকন বাহিনীর লোকজন তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। সন্ত্রাসী কাকনের নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত চরাঞ্চলের অসহায় কৃষকদের ওপর হামলা- মারধর করে ফসল, গবাদু পশু লুটের ঘটনা ঘটছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী কৃষক পরিবারের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মোঃ আব্দুল মোত্তালিব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীর সাঁড়া ঘাট ও চরাঞ্চল এলাকার স্থানীয় কৃষকরা ধান, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এছাড়াও সেখানে গরু ও মহিষ চড়িয়ে তাদের লালন-পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়। কিন্তু সন্ত্রাসী কাকনের নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত অসহায় কৃষকদের উপর হামলা, মারধর, ফসল ও গবাদী পশু লটের ঘটনা ঘটছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২৫ মে সাঁড়া ঘাট এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক পদ্মা নদীর চরে গরু চড়াতে গেলে আওয়ামী সন্ত্রাসী ইঞ্জিনিয়ার কাকন তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে রক্তাত্ব জখম করে। গুরুতর আহত কৃষকদের মধ্যে সাঁড়া ঝাউদিয়া এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে আনছার মাঝি (৬৭), আনছার মাঝির ছেলে মজনু (৩৫), মাঝদিয়া এলাকার সাদেকের ছেলে মাছিদুল (৩৬), মজিদুল (৪০), দুলাল খাঁ’র ছেলে লিটন (৪০) সোহান, আরাফাত ও এজাজুল। আহতদের মধ্যে লিটনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে সময় ওই কৃষকদের দুইটি গরু ছিনিয়ে নিয়ে পদ্মার চরে তারা আনন্দ উল্লাস আর সেই গরু জবাই করে ভুরিভোজ করে।
মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনকারীরা আরও বলেন, সন্ত্রাসী কাকন বাহিনী যাদের উপর হামলা করেছে, তারা সবাই প্রান্তিক কৃষক। চরের জমিতে ফসল ফলিয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। পদ্মা নদীতে জেগে উঠা নিজস্ব ও লীজ নেওয়া জমিতে দীর্ঘদিন ধরে তারা চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু চরে আস্তানা গেরে সন্ত্রাসী ইঞ্জিনিয়ার কাকন বাহিনী সেখানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বর্তমানে কেউ চরে গেলেই তাদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিটসহ রক্তাক্ত জখম করছে কাকনের সন্ত্রাসী বাহিনী। অবিলম্বে চরাঞ্চলের এই সন্ত্রাসী কাকন বাহিনীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দেন সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের বক্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর জানান, এ ঘটনায় এখনও পযর্ন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি, মামলা দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখা হচ্ছে, আমরা আমাদের মত করে কাজ করছি।