তরুণ প্রজন্মের গণমাধ্যম "দেশ পোস্ট" এ আপনাকে স্বাগতম। "দেশ পোস্ট" একটি মাল্টিমিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

অস্ত্র- মাদকসহ আটকের পর নৌ পুলিশকে টাকা দেওয়ার তালিকা ও স্বীকারোক্তির ভিডিও ভাইরাল

অস্ত্র- মাদকসহ আটকের পর নৌ পুলিশকে টাকা দেওয়ার তালিকা ও স্বীকারোক্তির ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষ্ণীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে চাঁদার ভাগ নেওয়া, অর্থের বিনিময়ে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ‍্যে নিয়মিত চাঁদার টাকা লেনদেনের বেশ কয়েকটি তালিকা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের স্বীকারোক্তির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ‍্যমে ভাইরাল হয়েছে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে,  ঈশ্বরদী ও লালপুরের পদ্মা নদী ও চরাঞ্চলে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে কাকন বাহিনী নামে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। কৃষকদের মারধর করে ফসল কেড়ে নেওয়া, জেলেদের কে অস্ত্র ঠেকিয়ে মাছ ছিনিয়ে নেয়া, প্রতিটি বালুবাহী নৌকা থেকে চাঁদাবাজিসহ চরে ত্রাস সৃষ্টি করা কাকন বাহিনীর নিত্তনৈমিত্তিক কাজ। আর দীর্ঘদিন ধরে এসব চাঁদাবাজির টাকার ভাগ নেওয়াসহ অর্থের বিনিময়ে অপরাধ কর্মকাণ্ডে সহায়তা করেছে নৌ পুলিশের সদস‍্যরা। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নাটোরের লালপুরের মোল্লাপাড়া চরে কাকন বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদক ও দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ আশরাফুল ইসলাম বাপ্পি (২৮), মেহফুজ হক সোহাগ (৩৯), মোসাম্মৎ রোকেয়া (৫৫) নামে তিনজনকে আটক করা হয়।
জানা যায়, এদিন বিকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ‍্যম ফেসবুকে এসব খাতার কয়েকটি পৃষ্ঠা ও আটককৃত দের বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। খাতায় লেখা তালিকা ও ভাইরাল বক্তব্য পর্যালোচনা এবং যাচাইবাছাই করে দেখা যায়, প্রতিদিন বা মাসিক হারে কোথায় কাকে কত টাকা দেওয়া হতো তা যেমন খাতায় উল্লেখ রয়েছে তেমনি সেসব কথা ভাইরাল বক্তব্যের মাধ‍্যমেও উঠে এসেছে । সেই খাতার পাতাগুলোর লেখা আর ভাইরাল বক্তব্য  লক্ষ্য করে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে নৌ পুলিশকে। তারা নৌ পুলিশের টহল টিমের সদস‍্যদের প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এছাড়াও নদীতে চলাচলকারী বিভিন্ন নৌকার মাঝিদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে সেই চাঁদার ভাগও দিতে হয় নৌ পুলিশকে। নৌকা প্রতি ৩০০ টাকা হারে নিয়মিত টাকা নিতো নৌ পুলিশ। প্রতিদিন অন্তত ১০০ – ১৫০ বা কখনও কখনও তারও বেশি পরিমাণ নৌকা থেকে চাঁদা আদায় করা হতো। এতে প্রতিমাসে শুধুমাত্র নৌ পুলিশকে দেওয়া টাকার অংকই দাড়ায় ১০ – ১২ লাখ বা তারও বেশি। নৌ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনে না বরং অর্থের বিনিময়ে নানাভাবে তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্ণীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফিরোজ উদ্দিন বলেন, আমি এখানে নতুন জয়েন করেছি। এগুলো আমার যোগদানের পূর্বের। যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব‍্যবস্থা নেবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
আপনি যোগদানের পরও লেনদেন হয়েছে, এরকম তথ‍্যও আছে। এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তালিকা আমিও দেখেছি, এরকম তথ‍্য সঠিক নয়। এ নিয়ে আরও প্রশ্ন করা হলে ব‍্যস্ত আছি বলে কল কেটে দেন ফাঁড়ির আইসি ফিরোজ উদ্দিন।
এ ব‍্যাপারে নৌ পুলিশের রাজশাহী অঞ্চলের পুলিশ সুপার নুরুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে, আমিও দেখেছি। যদি কেউ এরকম কোন কাজে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব‍্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরও একই মত, এ বিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব‍্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ, ভাইরাল হওয়া তালিকায় নৌ পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও ব‍্যক্তির নাম এবং টাকার পরিমাণ ও তারিখসহ বিভিন্ন তথ‍্য লেখা রয়েছে।

খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ‍্যমে শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2025 deshpost.net

Design & Development BY : ThemeNeed.com